১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (এটিইও) পদের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। শেষ সময়ে প্রস্তুতি গুছিয়ে নেওয়ার কৌশলগুলো জানাচ্ছেন ক্যারিয়ার–বিষয়ক পরামর্শক রবিউল আলম লুইপা।
এটিইও পদে আবেদনপ্রার্থীদের প্রথমে ১০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা, পরে ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা এবং সর্বশেষে ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বাংলা ২৫ নম্বর, ইংরেজি ২৫ নম্বর, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ২৫ নম্বর এবং গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান ২৫ নম্বর থেকে প্রশ্ন করা হবে।
শেষ সময়ের জন্য করণীয়
১.
বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি আছে এমন প্রার্থী এটিইও পরীক্ষায় ভালো করার সম্ভাবনা বেশি। তবে ভূগোল, নৈতিকতা, ইংরেজি সাহিত্য, কম্পিউটার, মানসিক দক্ষতার বিষয়গুলো থেকে প্রশ্ন এলেও সেটি সংখ্যায় খুবই কম। তাই বিগত এটিইও প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে যে বিষয় বা টপিক অধিক গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলো বেশি জোর দিয়ে পড়তে হবে। অগুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ও নতুন প্রশ্ন পড়ে এখন সময় নষ্ট করা বোকামি।
২.
নন-ক্যাডার পদের পরীক্ষাগুলোতে প্রশ্নের প্রচুর পুনরাবৃত্তি ঘটে থাকে। তাই শেষ সময়ে বিসিএসের বিগত প্রিলিমিনারি প্রশ্ন (১০ম থেকে ৪৬তম), নন-ক্যাডার বিগত প্রিলিমিনারি প্রশ্ন, প্রাথমিক বিদ্যালয় বিগত নিয়োগ প্রশ্ন এবং সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত হওয়া পিএসসির প্রশ্নগুলো বারবার পড়ুন। এই প্রশ্নগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য প্রশ্ন কমন পাওয়া যেতে পারে।
৩.
বাংলা ব্যাকরণের ধ্বনি ও ধ্বনির পরিবর্তন, ণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধান, সন্ধি, সমাস, উপসর্গ, প্রকৃতি ও প্রত্যয়, সমার্থক শব্দ, বানান ও বাক্য শুদ্ধিকরণ; বাংলা সাহিত্য থেকে পিএসসির পুরোনো লিখিত সিলেবাসের ১১ জন কবি, সাহিত্যিক; ইংরেজি ব্যাকরণ থেকে Article, Preposition, Sentence correction, Spellling, Vocabulary, Phrase and idioms; গণিত বিষয়ের লসাগু-গসাগু, শতকরা, লাভক্ষতি, ঐকিক নিয়ম, বীজ গাণিতিক সূত্রগুলো, উৎপাদক, সূচক ও লগারিদম, জ্যামিতি প্রভৃতি; বাংলাদেশ বিষয়াবলি অংশে জনসংখ্যা ও উপজাতি, অর্থনীতি, সংবিধান, সাম্প্রতিক বাংলাদেশ অধ্যায়গুলো গুরুত্ব দিয়ে রিভাইস করবেন। আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি ও সাধারণ বিজ্ঞানের জন্য বিগত বছরের প্রশ্নগুলো পড়লেই হয়ে যাবে।
৪.
প্রস্তুতি তো অনেক দিন হলো, এখনো প্রস্তুতির চেয়ে মডেল টেস্টের ওপর জোর দিন। বাসায় বসে ওএমআর শিট অথবা পরীক্ষার অ্যাপ ব্যবহার করে সময় ধরে ধরে এটিইও সিলেবাসের চারটি বিষয়ের ওপর আগামী এক সপ্তাহ মডেল টেস্ট দিন। নেগেটিভ নম্বরের কারণে আপনার প্রাপ্ত নম্বর অনেকটাই কমে যাবে, তাই যতটা সম্ভব নেগেটিভ নম্বর থেকে নিরাপদ থাকুন। বারবার পরীক্ষা দিয়ে কোন কোন প্রশ্নগুলো ভুল হচ্ছে, কোন টপিকগুলো নেগেটিভ নম্বর যোগ করছে, সেটি সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করুন, পরের মডেল টেস্টে সে সম্পর্কে সচেতন হোন। ৬০ মিনিটের বদলে ৫০ মিনিটে মডেল টেস্ট পরীক্ষা শেষ করুন।
৫.
পরীক্ষার হলে প্রশ্নের উত্তর কোন বিষয়ের পর কোন বিষয় দেবেন, সেটি এখন থেকে সিদ্ধান্ত নিন, সে অনুযায়ী মডেল টেস্ট দিন। মাথা ঠান্ডা রাখতে প্রশ্নের উত্তর প্রদানে সাধারণ জ্ঞান, বাংলা, ইংরেজি ও গণিত—এই ক্রম অনুসরণ করতে পারেন। যে প্রশ্নের উত্তরগুলো অজানা, সেগুলোতে সময় নষ্ট না করে পেনসিল দিয়ে দাগিয়ে পরে প্রশ্নে চলে যান। মনে রাখবেন, কঠিন ও সহজ উভয় প্রশ্নের উত্তরই কিন্তু ১ নম্বর, তাই কঠিন প্রশ্নের জন্য সময় নষ্ট করে সহজ প্রশ্ন সময়ের অভাবে মিস করা বোকামি। শেষ সময়ে ১০ মিনিট সময় হাতে রাখবেন যেন অজানা প্রশ্নগুলো নিয়ে ভাবা যায়।
৬.
প্রবেশপত্রের একাধিক কপি প্রস্তুত রাখা, পরীক্ষার কেন্দ্রের দূরত্ব সম্পর্কে ধারণা রাখা, একাধিক কালো কালির কলম নিয়ে যাওয়া, ওএমআর শিটে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও হাজিরা পাতায় প্রবেশপত্রের অনুরূপ স্বাক্ষর দেওয়া, একই সেটকোডের প্রশ্ন ও উত্তরপত্র নিশ্চিত করা ও পরীক্ষার হলে প্রভৃতি বিষয়ে সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৭.
যেহেতু এই পরীক্ষায় শুধু বিভাগীয় প্রার্থী অংশগ্রহণ করবেন, তাই কাট মার্ক অন্য যেকোনো প্রতিযোগিতামূলক প্রিলিমিনারি পরীক্ষার চেয়ে কম হবে বলে ধরে নেওয়া যায়। তাই মাথা ঠান্ডা করে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় যেকোনোভাবে টিকে থাকুন। আসল নিয়োগযুদ্ধ হবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায়।
সবার জন্য শুভকামনা।